IVF v/s ICSI: The Right Choice

Making the right choice when it comes to going for infertility treatment could make all the difference. Find out what works best for you – IVF or ICSI?

Read more in Bengali

IVF vs ICSI

বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় আইভিএফ নিয়েই আমরা বেশির ভাগ সময় আলোচনা করে থাকি। তবে এই ধরনের চিকিৎসায় আইভিএফ ছাড়াও অন্যান্য পন্থা রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল – আইসিএসআই বা ইকসি। দেখে নেব, কখন ইকসি-র প্রয়োজন হয়? শুক্রাণুর সংখ্যা কমে আসা, শুক্রাণু ঠিক ভাবে বেরোতে না পারা, শুক্রাণুর মধ্যে উচ্চমাত্রায় অস্বাভাবিকতা থাকা প্রভৃতি সমস্যা দেখা দিলেই ইকসি করা হয়। ধরুন, অনেকের বীর্যে অত্যন্ত কম পরিমাণে শুক্রাণু থাকে বা ওলিগোস্পার্মিয়া এবং একেবারেই শুক্রাণু থাকে না বা অ্যাজুস্পার্মিয়া থাকে। কিন্তু সার্জারির মাধ্যমে শুক্রাণু পুনরুদ্ধার করা যাবে। এ সব ক্ষেত্রে ইকসি করা হয়।

আইভিএফ কী?

আইভিএফ হল ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন। এক ধরনের বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা। এ ক্ষেত্রে মানব দেহের বাইরে পেট্রিডিশের মধ্যে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর নিষেক ঘটানো হয়। তার পরের দিনই শুক্রাণু প্রাকৃতিক ভাবেই ডিম্বাণুর সঙ্গে মিলিত হয়ে ভ্রূণ তৈরি হয়। ভ্রূণটিকে তিন থেকে পাঁচ দিন রেখে তার উপর নজর রাখেন এমব্রায়োলজিস্ট এবং সঠিক সময় বুঝে হবু মায়ের শরীরে ভ্রূণটিকে স্থাপন করা হয়।

আইসিএসআই (ইকসি) কী?

 ইকসি হল ইন্ট্রা সাইটোপ্লাজমিক স্পার্ম ইঞ্জেকশন। এক ধরনের বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা। এ ক্ষেত্রে এমব্রায়োলজিস্ট একটা শুক্রাণু বেছে নেন। বাছাই করা শুক্রাণুটিকে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে সরাসরি ডিম্বাণুর মধ্যে গেঁথে দেওয়া হয়। ফের একই পদ্ধতিতে নিষিক্ত ডিম্বাণুটিকে হবু মায়ের গর্ভে স্থাপন করা হয়।

আইভিএফ ও ইকসি-র সাদৃশ্য:

আইভিএফ-এ যেমন সঙ্গী অথবা দম্পতি অথবা দাতাদের (ডোনার) ডিম্বাণু-শুক্রাণু সংগ্রহ করা হয়, ইকসি-র ক্ষেত্রেও ঠিক সে ভাবেই ডিম্বাণু-শুক্রাণু সংগ্রহ করা হয়। ডিম্বাণু বাছাইয়ের দিনই নিষেক ঘটান এক জন এমব্রায়োলজিস্ট। আর তার পরের দিনই পরীক্ষা করে দেখেন যে, কোনটা কোনটা নিষিক্ত হয়েছে। এ বার নিষিক্ত ডিম্বাণুগুলিকে তিন থেকে পাঁচ দিন ইনকিউবেটরে রেখে নজরদারি চালানো হয়। যে ভ্রূণ সব থেকে ভাল, সেটিকে হবু মায়ের গর্ভে স্থাপন করা হয়।

সাদৃশ্য হয়তো এই একটা জায়গাতেই। কিন্তু দুই পদ্ধতির পার্থক্য অনেক। তাই এ বার আসা যাক এই দুই পদ্ধতির পার্থক্যের কথায়।

আইভিএফ ও ইকসি-র পার্থক্য:

প্রক্রিয়া

প্রথম ফারাকটা রয়েছে চিকিৎসা পদ্ধতিতেই। আইভিএফ-এর ক্ষেত্রে পেট্রিডিশের মধ্যে নিষেক ঘটানো হয় এবং এক রাতের মধ্যেই শুক্রাণুটি প্রাকৃতিক উপায়ে ডিম্বাণুুর গায়ে গেঁথে যায়।

ইকসি-র ক্ষেত্রে শুক্রাণুটি বেছে নিয়ে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে সরাসরি ডিম্বাণুর গায়ে গেঁথে দেওয়া হয়।

কাদের জন্য কোনটা

মূলত শুক্রাণু সম্পর্কিত বন্ধ্যাত্বের সমস্যার সম্মুখীন যাঁরা, তাঁদের ক্ষেত্রেই ইকসি করা হয়। পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় সাফল্য এনে দিয়েছে এই প্রক্রিয়া।

আর আইভিএফ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় অনেক ধরনের বন্ধ্যাত্বের সমস্যায়। আর এটা বহুল প্রচলিত সফল একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। আলাদা আলাদা বয়স এবং ভিন্ন পরিস্থিতির জন্য বিভিন্ন রকমের আইভিএফ পদ্ধতি রয়েছে। 

আইভিএফ-এর উপকারিতা:

  • ডিম্বাণু নিষেকের ক্ষেত্রে ইকসি-র তুলনায় কম মাত্রার ইনভেসিভ
  • মানুষের ভুলে ডিম্বাণুর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম
  • শুক্রাণু মানব দেহের বাইরে পেট্রিডিশে প্রাকৃতিক উপায়েই ডিম্বাণুর সঙ্গে মিলিত হয়

আইভিএফ-এর অপকারিতা:

  • নিষেক পুরোপুরি ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি
  • ডিম্বাণুর দিকে অনেক শুক্রাণু ধেয়ে আসতে পারে, এটার নিয়ন্ত্রণ থাকে না
  • পুরুষ বন্ধ্যাত্বে আক্রান্তের ক্ষেত্রে খুব একটা উপকারি নয়
  • ডিম্বাণু সংগ্রহের পর বোঝা যায় না সেটা কতটা পরিণত

ইকসি-র উপকারিতা:

  • পুরুষ বন্ধ্যাত্বের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী
  • সাধারণ নিষিক্ত ডিম্বাণুর সংখ্যা বেশি
  • ডিম্বাণুর মান জানা যেতে পারে
  • সব ডিম্বাণুর নিষিক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি – কোনও ডিম্বাণুর অপচয় হয় না

ইকসি-র অপকারিতা:

  • অভিজ্ঞ ও দক্ষ এমব্রায়োলজিস্ট না হলে ডিম্বাণুর ক্ষতির সম্ভাবনা বেড়ে যায়
  • আইভিএফ-এর তুলনায় বেশিই ইনভেসিভ পদ্ধতি
  • অতিরিক্ত খরচের সম্ভাবনা
  • এই পদ্ধতিতে জন্মানো সন্তান বংশ পরম্পরায় বাবার মতোই বন্ধ্যাত্বের শিকার হতে পারে

Identifying the Early Signs of Infertility in Women

Irregular periods & inability to ovulate could indicate female infertility. Consult with a doctor and get tested at the earliest.

Read more in Bengali

বন্ধ্যত্ব! শব্দটা শুনেই নির্ঘাত মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল! কি তাই তো? ভেঙে পড়ারই কথা! কারণ এখনও বন্ধ্যত্ব নিয়ে বেশির ভাগ মানুষের ধারণা পরিষ্কার নয়।
তাই সবার আগে জেনে নিতে হবে, বন্ধ্যত্ব আসলে কী? ধরুন, কোনও প্রোটেকশন ছাড়াই আপনি নিয়মিত আপনার সঙ্গীর সঙ্গে শারীরিক ভাবে মিলিত হচ্ছেন, অথচ কনসিভ করতে পারছেন না। এ ভাবে ছ’মাস অথবা এক বছর কাটলে কিন্তু বুঝতে হবে যে, আপনি বন্ধ্যত্বের সমস্যায় ভুগছেন। বয়সের সঙ্গেও কিন্তু বন্ধ্যত্বের যোগ রয়েছে। যেমন- বয়স ৩৫ পেরিয়ে যাওয়ার পর ছ’মাস অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেও কনসিভ করতে না পারলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
অনেকেই বলে থাকেন, মা হওয়ার আদর্শ বয়সসীমা হচ্ছে ২৩-৩০ বছর। আসলে তার পর ডিম্বাণুর মান
পড়তে থাকে ক্রমশ। তাই অনেক ক্ষেত্রেই ডিম্বাণু ফ্রিজ করে রাখারও পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
অল্প বয়সের সুস্থ, সবল ডিম্বাণু সংরক্ষিত থাকলে তা পরে ব্যবহার করা যায়। আর রিপোর্ট বলছে, প্রতি
১০ জন দম্পতির মধ্যে ১ জন বন্ধ্যত্বের সমস্যায় ভোগেন। তবে বন্ধ্যত্বের সমস্যায় ভুগলে মা হওয়া
যাবে না, এই ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল। আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে বন্ধ্যত্বের সঠিক চিকিৎসা হলে কিন্তু
সহজেই মা হতে পারবেন।
এটা তো নয় গেল! কিন্তু এ বার যে প্রশ্নটা আসে, সেটা হল- বন্ধ্যত্বের আঁচ কি আগে থেকে পাওয়া যায়?
কিছু কিছু লক্ষণ দেখে অবশ্যই আগে থেকে বন্ধ্যত্বের আঁচ পাওয়া সম্ভব। তবে তার আগে জেনে নিতে
হবে কনসিভ করার জন্য কোন কোন বিষয় অত্যন্ত জরুরি।

কনসিভ করতে যে বিষয়গুলি জরুরি:

  • নিয়মিত মাসিক চক্র
  • মাসের নির্দিষ্ট সময়ে ওভ্যুলেশন
  • ওই সময় নিয়মিত সহবাস
  • সুস্থ ফ্যালোপিয়ান টিউব ও জরায়ু
  • সঙ্গীর থেকে শক্তিশালী স্পার্ম

ফলে বুঝতেই পারছেন, মাসিক চক্র ও ওভ্যুলেশনে সমস্যা হলে কিন্তু সেটাকে বন্ধ্যত্বের উপসর্গ বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। তা ছাড়াও বন্ধ্যত্বের আরও কিছু উপসর্গ রয়েছে।

বন্ধ্যত্বের আঁচ কী ভাবে পাওয়া যায়?

  • পলিসিস্টিক ওভারি একটি লাইফস্টাইল ডিসঅর্ডার। অনিয়মিত ঋতুস্রাব, ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ, ক্লান্তি, তলপেটে ব্যথা- এগুলো পলিসিস্টিক ওভারির উপসর্গ। এই রোগের কারণে শরীরে হরমোনের তারতম্য ঘটে এবং ওভারিতে ছোট ছোট সিস্ট থাকার কারণে কনসিভ করতে সমস্যা হয়। তবে একটু সচেতন হলেই এটা কমানো সম্ভব।
  • ওভারিতে টিউমার থাকলেও কনসিভ করতে অসুবিধা হয়। এটাও বন্ধ্যত্বের অন্যতম উপসর্গ।
  • এন্ডোমেট্রিওসিসের সমস্যা থাকলেও কিন্তু বন্ধ্যত্বের সম্মুখীন হতে পারেন। পিরিয়ডসের সময় অসহ্য তলপেটে যন্ত্রণা, বেশি রক্তপাত কিন্তু এন্ডোমেট্রিওসিসের লক্ষণ। প্রথম থেকেই যদি এই সমস্যা থাকে, তা হলে কিন্তু দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
  • থাইরয়েড গ্রন্থির অস্বাভাবিকতা থাকলেও গর্ভবতী হতে সমস্যা হবে। আসলে থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে রোগী অনিয়মিত মাসিক চক্র, আচমকা ওজন বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যার সম্মুখীন হন। তাই এই সমস্যা থাকলে কিন্তু সতর্ক হতে হবে।
  • জেনিটাল টিউবারকিউলোসিস (টিবি) থেকেও আসতে পারে বন্ধ্যত্ব। টিবি ব্যাকটেরিয়া প্রথমে ফুসফুসকে আক্রমণ করে। পরে তা জরায়ু ও ফ্যালোপিয়ান টিউবে ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণ ঘটায়। এর উপসর্গগুলো সে ভাবে চোখে পড়ে না। তবে অনিয়মিত মাসিক, ক্রমাগত স্রাব, পেট ব্যথা- এ সব থাকলে সাবধান হতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
  • ইউটেরাস নন-ক্যানসার টিউমার বা ফাইব্রয়েড হলেও কিন্তু সাবধান। মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত, অনেক দিন ধরে ঋতুস্রাব চলা, পেলভিক অঞ্চলে ব্যথা- এগুলো ফাইব্রয়েডের লক্ষণ। তবে অনেক ক্ষেত্রে এর উপসর্গ ফুটেও ওঠে না।
  • অনেক সময় জরায়ু ও ফ্যালোপিয়ান টিউবে সংক্রমণ হয়ে থাকে। ডাক্তারি ভাষায় যাকে পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ বলা হয়। যার থেকে আসতে পারে বন্ধ্যত্ব।
  • অতিরিক্ত স্ট্রেস, ওজন বেড়ে যাওয়া, অ্যালকোহল সেবন, ধূমপান, ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে ওষুধ খাওয়া- এগুলোও কিন্তু বন্ধ্যত্বের কারণ। সে ক্ষেত্রে নেশা ছাড়তে হবে এবং জীবনযাত্রার ধরন পাল্টে ফেলতে হবে।

‘My baby is crying, so I must breastfeed’ – It’s Time You Stop Believing These Myths!

There are several misconceptions regarding breastfeeding, which can make decision-making tough for new mommies. Here are a few myths you need to stop believing!

Read more in Bengali

Breastfeeding

খাবার অথবা জল ছাড়া কি আমরা বাঁচতে পারি? একেবারেই না। কিন্তু শিশুরা বেঁচে থাকতে পারে শুধু মাতৃদুগ্ধের উপর নির্ভর করে! জন্মের পর থেকে অন্তত ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধুমাত্র মাতৃদুগ্ধই হয়ে ওঠে তাদের রসদ। আর মাতৃদুগ্ধই তাদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি থেকে শুরু করে ইমিউনিটি – সব কিছুর জোগান দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে তাই মাতৃদুগ্ধই হল অমৃতসম! তবে অনেকেই মনে করেন যে, স্তন্যপান অত্যন্ত জটিল একটা বিষয়। তা কিন্তু একেবারেই নয়। কারণ স্তন্যপান নিয়ে বহু প্রচলিত ধারণা যুগের পর যুগ ধরে চলে আসছে, আর সেই ভুল ধারণাগুলো ভাঙার সময় এসে গিয়েছে। জেনে নিন, স্তন্যপান করানো সম্পর্কে আপনার কোন ধারণা ঠিক, আর কোন ধারণা ভুল!

তত্ত্ব: শিশুর জন্মের পর মায়ের স্তনগ্রন্থি থেকে নিঃসৃত প্রথম দুধ বা কলোস্ট্রাম ফেলে দেওয়া উচিত। কারণ এটি খারাপ।
তথ্য: কলোস্ট্রাম একেবারেই খারাপ বা শিশুর জন্য ক্ষতিকর নয়। বরং এটা অত্যন্ত উপকারী। এর মধ্যে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা যে কোনও সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। ফলে বুঝতেই পারছেন, কলোস্ট্রাম শিশুর ইমিউনিটি বাড়ায়। আসলে কলোস্ট্রাম অত্যন্ত পুষ্টিকর, ভিটামিন কে এবং ভিটামিন এ সমৃদ্ধ। তাই সন্তানের জন্মের একদম পরেই তা সন্তানকে দেওয়া উচিত। ধরে নিন, এটাই আপনার সন্তানের প্রথম ইমিউনিটি বুস্টার শট।
তত্ত্ব: সি-সেকশন ডেলিভারির পর স্তন্যপান একেবারেই সম্ভব নয়।
তথ্য: সি-সেকশন ডেলিভারির পর সন্তানকে স্তন্যপান সম্ভব। হয়তো প্রক্রিয়া শুরু করতে দেরি হতে পারে। কারণ যত ক্ষণ না আপনার অ্যানাস্থেশিয়ার প্রভাব কাটছে, তত ক্ষণ আপনি স্তন্যদান শুরু করতে পারবেন না।
তত্ত্ব: ছোট স্তনে কম দুধ উৎপন্ন হয়।
তথ্য: বড় স্তনের মতো ছোট স্তন থেকেও সমান পরিমাণেই দুধ উৎপন্ন হয়। কারণ স্তনদুগ্ধের উৎপন্ন নির্ভর করে নিঃসরণকারী গ্রন্থির উপর, যা ছোট-বড় সব স্তনেই সমান সংখ্যায় থাকে। আসলে আপনার স্তনদুগ্ধের পরিমাণ নির্ভর করবে আপনার সন্তানের উপর। কী ভাবে? শিশুরা স্তনগ্রন্থি থেকে যত দুধ টানবে, তার উপরেই নির্ভর করে স্তনদুগ্ধের পরিমাণ। ওরা যত বেশি দুধ টানবে, তত বেশি পরিমাণে অক্সিটোসিন এবং প্রোল্যাকটিন হরমোন নিঃসৃত হবে। আর এই দুই হরমোনই স্তনদুগ্ধ তৈরি এবং সরবরাহে প্রধান ভূমিকা পালন করে। 
তত্ত্ব: স্তন্যপান করানোর সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের জলও খাওয়াতে হবে।
তথ্য: আসলে স্তনদুগ্ধ জলসমৃদ্ধ। ফলে শিশুদের স্তন্যপান করানো হলে স্তনদুগ্ধ থেকেই তারা পর্যাপ্ত জল পেয়ে যায়। তাই আলাদা করে তাদের আর জল খাওয়ানোর প্রয়োজন হয় না। জল অথবা অন্য কোনও তরল সাপ্লিমেন্ট দিলে তা তাদের খিদে কমিয়ে দেবে, ফলে তারা স্তনদুগ্ধ আর পান করবে না। আর শিশু স্তন্যপান না করলে মায়ের স্তনে প্রোল্যাকটিন আর অক্সিটোসিন ক্ষরণ হবে না, যা মায়ের দুধ উৎপাদনের পরিমাণ কমিয়ে দেবে।
তত্ত্ব: বাচ্চারা যদি স্তনদুগ্ধ পান না করে, তা হলে স্তনদুগ্ধ টক হয়ে যায়।
তথ্য: বাচ্চা স্তনদুগ্ধ পান করুক বা না-করুক মায়ের স্তনে সঞ্চিত দুধ সব সময়ই টাটকা থাকে। তবে স্তনদুগ্ধ বাইরে বার করে সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আলাদা। কারণ স্তন থেকে বাইরে বার করা দুধ একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ভাল থাকে।

তত্ত্ব: শিশুকে স্তন্যপান করানোর আগে সব সময় স্তনবৃন্ত পরিষ্কার করে নিতে হবে। 
তথ্য: একেবারেই ভুল ধারণা। তবে আগে বলি, এই ভুল ধারণা কোথা থেকে এসেছে। অনেকেই মনে করেন, স্তনবৃন্ত পরিষ্কার না করলে সেখান থেকে শিশুর সংক্রমণ হতে পারে। এটা পুরো ভুল ধারণা। কারণ শিশুরা ইমিউনিটি পায় স্তনদুগ্ধ থেকেই। তবে স্তনবৃন্ত বারবার পরিষ্কার করা হলে ত্বকের ন্যাচারাল অয়েলস নষ্ট হয়, যার ফলে ত্বক শুকিয়ে ফেটে যেতে পারে।
তত্ত্ব: যদি শিশুদের ডায়েরিয়া অথবা গা-বমি ভাব থাকে, তখন তাদের স্তন্যপান করানো উচিত নয়। 
তথ্য: একেবারেই ভুল ধারণা। কারণ যদি শিশুদের কোনও সংক্রমণ থাকে, সে ক্ষেত্রে মাতৃদুগ্ধ থেকেই ওরা উপকার পাবে। অন্য খাবার বন্ধ করে দেওয়া হলেও স্তন্যপান করিয়ে যেতে হবে। তবে যদি স্তনদুগ্ধ পান করেই শিশু বমি করে ফেলে. সে ক্ষেত্রে স্তন্যপান বন্ধ রাখতে হবে।
তত্ত্ব: যে সব মায়েরা স্তন্যপান করান, তাঁদের বেশি করে গরুর দুধ খাওয়া উচিত। এতে তাঁর স্তনেও প্রচুর পরিমাণে দুধ তৈরি হবে।
তথ্য: দুধ খেলেই যে দুধ বেশি বেশি করে তৈরি হবে, এই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। যেটা সব থেকে বেশি প্রয়োজন, সেটা হল- শাকসবজিযুক্ত ডায়েট। সেই সঙ্গে ফল, শস্য ও প্রোটিনও থাকবে। আর এগুলোই আপনার স্তনদুগ্ধের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়।    
তত্ত্ব: বেশি বেশি দুধ উৎপাদন করার জন্য স্তনকে বিশ্রাম দিতে হয়।
তথ্য: এই ধারণা পুরোপুরি মিথ্যে। স্তনকে বিশ্রাম দিলে বরং হিতে বিপরীত হতে পারে। এটা আপনার স্তনে দুধ সরবরাহ কমিয়ে দিতে পারে। আসলে সঞ্চিত দুধের আধার হিসেবে কাজ করে স্তন। আর যত তাড়াতাড়ি তা খালি হয়ে হয়, তত তাড়াতাড়ি আবার তা ভর্তি হয়ে যায়। অনেক সময় ধরে স্তন পূর্ণ থাকলে মস্তিষ্কে একটি বার্তা যায়, যার ফলে আপনার দেহ ধীর গতিতে দুধ উৎপাদন করে।
তত্ত্ব: যদি বাচ্চা প্রচণ্ড কান্নাকাটি করে, তা হলে মা ঠিকমতো দুধ  উৎপাদন করতে পারছে না। 
তথ্য: আসলে বাচ্চারা বিভিন্ন কারণে কান্নাকাটি করে। তারা ভিজে যেতে পারে, তাদের ঠান্ডা অথবা গরম লাগতে পারে, কোনও শব্দ শুনে ভয় পেতে পারে। মূলত এই সব কারণে বাচ্চারা কাঁদে। অনেক সময় কোলে উঠতে চেয়েও কান্নাকাটি করে শিশুরা। প্রচণ্ড কাঁদছে মানে এই নয় যে, বাচ্চাকে স্তন্যপান করাতে হবে। আর এটা ভেবে নিলে বাচ্চার কান্নার আসল কারণটা চাপা পড়ে যাবে। তাই প্রথমেই তাদের অস্বস্তির কারণটা খুঁজে বার করার চেষ্টা করতে হবে।