Down Memory Lane

The pleasure of being able to gift a new life is beyond words. Read on to know about this couple’s journey of parenthood against all odds.

Read more in Bengali

New Baby Born

সেদিন দক্ষিণ কলকাতার এক বুকস্টোরের কিড্স সেক্শনে বই কিনছিলাম আমার মেয়ের জন্যে| ছোটো, বড়ো বেশ কয়েকটি বাচ্চাও ছিল ওখানে| তাদের মধ্যেই একজন ছিল বেশ দুরন্ত| মুখোমুখি পড়তেই, ওকে কাছে ডেকে জিজ্ঞ্যেস করেই ফেললাম ওর নাম|

উত্তর না দিয়েই বাচ্চা মেয়েটি দৌড়ে গিয়ে একটি বুকশেল্ফের আড়াল থেকে হাসতে লাগলো| আমি আর কিছু বলার আগেই এক ভদ্রলোক এগিয়ে গিয়ে ওকে বললেন, “একি শোনা, এদিকে এসে ডাঃ আন্টি কে নাম বলে দাও|” তখন সে আড়াল থেকে বেড়িয়ে এসে বললো, “হ্যালো আন্টি, মাই নেম ইস মেখলা দে|”

ইতিমধ্যে, মেয়েটির মা ও এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “ম্যাডাম, চিনতে পারছেন আমাদের? আমি আসানসোলের ইশানী আর আমার হাসব্যান্ড অভিষেক| আপনার কাছে আসতাম ট্রিটমেন্ট এর জন্যে|” কয়েক সেকন্ডের মধ্যে মনে পড়ে গেলো ওদের সব কথা|

এটি ২০০৯ এর কথা| এক প্রবল বৃষ্টির দিনে ইশানি আর ওর বর এলো আমার চেম্বারে| জানালো যে ওদের বিয়ে হয়েছে সাত বছর কিন্তু বাচ্চা আসেনি| ওরা বিভিন্ন রকমের চিকিৎসা ও চালিয়ে গেছে কিন্তু ফল পায়নি|

আমি ওদের দুজনকেই বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করতে বললাম| তারপর, সেই সবের রিপোর্ট দেখে বুঝলাম যে আই ভি এফ এই সন্তান আসার সম্ভবনা আছে| ওরাও রাজি হলো| শুরু করলাম ফার্স্ট সাইকেল| কিন্তু রেজাল্ট এলো নেগেটিভ| ওদের জানাতে দেখলাম দুজনেই চুপ| শেষে ইশানি বললো যে ওরা জানতো যে এই ট্রিটমেন্ট এর সফল্যতার মাত্রা ৪০ % (40 %) এর কাছাকাছি জানা সত্ত্বেও ওরা আবার চেষ্টা করতে রাজি আছে| তাই শুনে ওদের আবার আসতে বললাম পরের মাসে|

কথামতো ওরা এলো পরের মাসে| শুরু করলাম সেকন্ড সাইকেল| প্রথম দিকটা ভালো গেলেও, শেষ রক্ষা করতে অক্ষম হলাম| ওদের জানালাম, “সরি, এবার ও রেজাল্ট নেগেটিভ, নেক্সট মাসে আরেকবার…” সেই শুনে অভিষেক বললো, “দিদি আপনি আমাদের অনেক সাহায্য করেছেন. কিন্তু আরেকবার চেষ্টা করে দেখার মতো আর্থিক ক্ষমতা আমাদের আর নেই|” সেইদিন ওদের শান্তনা দেওয়ার ভাষা ছিলোনা আমার কাছে|

ডিসেম্বরের শেষে হঠাৎ ফোন এলো ইশানির| আমি অবাক হলাম| জানালো যে ওরা আরেকবার চেষ্টা করতে ইচ্ছুক এবং টাকাও জোগাড় করে ফেলেছে| ইশানি আরো জানালো যে ওর মন বলছে ও এইবার মা হতে পারবে| ওর দৃঢ় বিশ্বাস দেখে আমি খুশি হলাম আর আরো সাহস পেলাম| দেরি না করে সেই মাসেই শুরু করলাম থার্ড সাইকেল| সত্যিই এইবার মনের ইচ্ছে পুরোন হলো ইশানির| সে মা হলো একটি নিষ্পাপ কন্যা সন্তানের|

আর সেই বাচ্চাটির সাথে ১০ (10) বছর পর হঠাৎ দেখা হয়ে গেলো আমার| এই খুশি কথায় বলে বোঝাতে পারতাম না তাই ভাবলাম অন্তত শেয়ার করি আপনাদের সাথে|